শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইতিহাস সৃষ্টি করে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল (বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে টাইগাররা। এটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় এবং দেশের বাইরে একাধিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা প্রথম বাংলাদেশি অধিনায়ক হলেন লিটন দাস।
মেহেদীর ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে লঙ্কানদের অল্প রানে আটকে রাখা
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শেখ মেহেদী হাসানের দুর্দান্ত বোলিং তোপের মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এই অফ-স্পিনার একাদশে ফিরেই নিজের ক্যারিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স দেখান। পাওয়ার প্লের মধ্যেই লঙ্কানদের ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি, এবং সবমিলিয়ে মাত্র ১১ রান খরচায় ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার করেন। তার বিধ্বংসী বোলিংয়ের সামনে শ্রীলঙ্কা ৬৬ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে।
যদিও ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ৪৫ রানের একটি কার্যকর ইনিংস খেলেন এবং শেষদিকে দাসুন শানাকা ২৫ বলে ৩৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন, তবুও শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ মামুলিই থেকে যায়। তারা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩২ রান তুলতে সক্ষম হয়।
তানজিদ তামিমের ঝড়ো ফিফটিতে বাংলাদেশের সহজ জয়
১৩৩ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ অবশ্য শুরুতেই ধাক্কা খায়। ইনিংসের প্রথম বলেই শূন্য রানে ফিরে যান পারভেজ হোসেন ইমন। তবে এরপরই ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। প্রথম কয়েক বল দেখে খেলার পর একের পর এক বাউন্ডারি ও ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান তিনি। অধিনায়ক লিটন দাস এক প্রান্ত আগলে রেখে কার্যকর রান যোগ করতে থাকেন।
তানজিদ ও লিটনের জুটিতে ৫০ বলে ৭৪ রান আসার পর ২৬ বলে ৩২ রান করা লিটন কামিন্দু মেন্ডিসের বলে ফিরে যান। তবে এই ধাক্কা তানজিদকে দমাতে পারেনি। ২৭ বলে নিজের ফিফটি পূরণ করেন তিনি। ৬১ রানে একবার জীবন পেলেও, এরপর আর কোনো সুযোগ দেননি। তিনি ৪৭ বলে ৭৩ রানের এক অপরাজিত বিস্ফোরক ইনিংস খেলে অনায়াসে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন, যেখানে তার সঙ্গে ২৫ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন হৃদয়।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শুধু সিরিজই জেতেনি, বরং শ্রীলঙ্কার মাটিতে একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে হারানোর আত্মবিশ্বাসও অর্জন করেছে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।