মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ বিএনপির, গঠিত হলো তদন্ত কমিটি

রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় সাম্প্রতিক সোহাগ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।1 দলটি দাবি করেছে, এই ঘটনার মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার একটি অজুহাত তৈরি করা হচ্ছে।2 হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করতে বিএনপি একটি ‘তদন্ত ও তথ্যানুসন্ধানী কমিটি’ গঠন করেছে।

সোমবার (১৪ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ডকে ব্যবহার করা হচ্ছে।4 অসংখ্য মানুষের সামনে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছাকাছি স্থানে ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রতিরোধ না হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, একটি চিহ্নিত মহল পরিকল্পিতভাবে বিএনপি এবং তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের চরিত্রহননের চেষ্টা চালাচ্ছে। সরকার পরিচালনায় না থাকা সত্ত্বেও একটি নির্দিষ্ট দলকে দায়ী করে বিক্ষোভ ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, পরিকল্পিতভাবে কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আইডি ও পেজ থেকে আগে তৈরি করে রাখা অপপ্রচারমূলক ফটোকার্ড ছড়ানো হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায় ভুয়া তথ্য প্রচারের ক্যাম্পেইন পূর্বপরিকল্পিত ছিল। অপরাজনীতি প্রতিহত করার ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতার প্রতিও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিএনপির মহাসচিব পুনর্ব্যক্ত করেন যে, মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকরের বিষয়ে তাদের দলীয় অবস্থান সুদৃঢ়।5 হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আজীবন বহিষ্কারের মতো সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি নিহত সোহাগের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার এজাহারের অসংগতি নিয়ে প্রকাশিত বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারীরা এখনো গ্রেফতার হননি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জোর দিয়ে বলেন, অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় থাকতে পারে না এবং ব্যক্তির অপরাধের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।7 তিনি অভিযোগ করেন, একটি বিকারগ্রস্ত গোষ্ঠী কোমলমতি শিশু-কিশোরদের ব্যবহার করে তাদের কুৎসিত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করছে এবং আগামী প্রজন্মের মূল্যবোধ ধ্বংস করছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শত বাধা পেরিয়ে জনগণের কাছে বাংলাদেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়াই তাদের একমাত্র অগ্রাধিকার। তিনি স্বৈরাচার পতন আন্দোলনের প্রধান নেতা এবং গণ-অভ্যুত্থানের প্রাণপুরুষ হিসেবে দলের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। মির্জা ফখরুল আশা করেন, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ জাতি ষড়যন্ত্রকারীদের মাধ্যমে বিভক্ত হবে না এবং এই অপরাজনীতি প্রতিহত করার ক্ষেত্রে সরকার সচেতন হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত এমন কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ বাধাগ্রস্ত করলে তার দায় সংশ্লিষ্টদেরই বহন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top