রাজনৈতিক দলগুলো জরুরি অবস্থা ঘোষণায় সংবিধান সংশোধনে ঐকমত্যে

রাজনৈতিক দলগুলো জরুরি অবস্থা ঘোষণাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার রোধে সংবিধানের ১৪১(ক) ধারা সংশোধনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১২তম দিনের সংলাপে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জরুরি অবস্থা ঘোষণার মেয়াদ বর্তমান ১২০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিন করা হবে। নতুন প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর একক স্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার সম্মতির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা/নেত্রী বা তাঁর অনুপস্থিতিতে উপনেতাকে উপস্থিত থাকতে হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংবিধানের সংশোধিত প্রস্তাবে ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দের পরিবর্তে ‘রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতার প্রতি হুমকি’, ‘মহামারি’ ও ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ শব্দগুলো যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া জরুরি অবস্থায়ও নাগরিকের জীবনরক্ষার অধিকার ও নির্যাতন থেকে মুক্তির অধিকার অলঙ্ঘনীয় রাখার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংলাপে বিভিন্ন দলের নেতারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক সর্বদলীয় বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আহমদ আবদুল কাদের মন্ত্রিসভায় বিরোধী দলকে যুক্ত করার পরামর্শ দেন। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বিরোধীদলীয় নেতার উপস্থিতি নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার জানান, বিরোধীদলীয় উপনেতাও মন্ত্রী পদমর্যাদার হওয়ায় তাঁর উপস্থিতিও গ্রহণযোগ্য হবে। শেষ পর্যন্ত সকল দলের সম্মতিতে সংশোধিত প্রস্তাব গৃহীত হয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বতন নেতারা অংশগ্রহণ করেন। গত ৭ ও ১০ জুলাই জরুরি অবস্থা বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল। নতুন এই সংশোধনী প্রস্তাব সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিশনের অন্যতম অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top