সন্দ্বীপে নৌযোগাযোগে নতুন সংকট: ফেরিঘাটে নাব্যতা হ্রাস ও উত্তাল সাগর

চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ: চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের নৌযোগাযোগ আবারও মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সম্প্রতি চালু হওয়া গুরুত্বপূর্ণ ফেরি সার্ভিস এখন গুপ্তছড়া ফেরিঘাটে তীব্র নাব্যতা সংকটে ভুগছে, যা ফেরি চলাচলকে হুমকিতে ফেলে দিয়েছে। একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় এবং ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় সন্দ্বীপের বাসিন্দাদের যাতায়াত নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

নাব্যতা সংকট ও দুর্ভোগ:

আজ (শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫) প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সন্দ্বীপ উপজেলার গুপ্তছড়া ফেরিঘাটে পলি জমে চ্যানেলের অধিকাংশ স্থান ভরাট হয়ে গেছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি এবং পূর্বে খনন করা চ্যানেলে পলি জমার কারণে ফেরি ও জাহাজ চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে গুপ্তছড়া-বাঁশবাড়িয়া রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ফেরির মাস্টাররা জানিয়েছেন, দ্রুত ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা না নিলে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা সন্দ্বীপবাসীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আবহাওয়ার প্রভাব ও ফেরি বন্ধের শঙ্কা:

নাব্যতা সংকটের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের উত্তাল অবস্থা এবং ভারী বর্ষণ পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার শেষরাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত সন্দ্বীপসহ এই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও বজ্রঝড় হতে পারে। এমনিতেই বর্ষা মৌসুমে (এপ্রিল থেকে অক্টোবর) সন্দ্বীপ চ্যানেল অত্যন্ত উত্তাল থাকে, যে কারণে উপকূলীয় ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানেও উত্তাল সাগরের কারণে যেকোনো মুহূর্তে ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ:

সন্দ্বীপের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন পর ফেরি সার্ভিস চালুর মাধ্যমে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা সরাসরি যোগাযোগের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এই পরিষেবা মানুষের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনকে সহজলভ্য করে সন্দ্বীপের আর্থসামাজিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল। তবে বর্তমান নাব্যতা সংকট এবং প্রতিকূল আবহাওয়া সেই স্বপ্ন পূরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, সন্দ্বীপের উত্তর অংশে নবসৃষ্ট ভূমি উন্নয়ন এবং দক্ষিণ উড়ির চরে ভাঙন রোধে নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদে দ্বীপের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। কিন্তু আপাতত, নৌযোগাযোগের এই সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top