মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যা: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তির ঘোষণা, গ্রেপ্তার ৫

রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে নৃশংসভাবে ভাঙারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, এই মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে করা হবে, যা দ্রুততম সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবে। শনিবার (১২ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

আইন উপদেষ্টার ঘোষণা ও সরকারের দৃঢ়তা:

আসিফ নজরুল তার পোস্টে বলেন, “মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর।” তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, “এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২ এর ধারা ১০ এর অধীনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।” এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে নিজেদের দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছে।

নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত:

গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, হামলাকারীরা রড ও বড় পাথর দিয়ে সোহাগের মাথা ও বুকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। হত্যার পর হামলাকারীরা উল্লাস করে সোহাগের মুখে পাথর নিক্ষেপ করে। এই হত্যাকাণ্ডের ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা:

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪ জন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে। যদিও এই বহিষ্কারের সরাসরি কারণ বিস্তারিত জানানো হয়নি, তবে এটি এই ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত বহন করে।

মিটফোর্ডের এই হত্যাকাণ্ড জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আইন উপদেষ্টার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে মামলার নিষ্পত্তির ঘোষণা বিচারপ্রত্যাশীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিচার বিভাগ এখন দ্রুততার সঙ্গে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জের মুখে।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top