দায় স্বীকার ও রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন:
ট্রাইব্যুনালে দেওয়া বক্তব্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলাম, সব রহস্য উন্মোচন করব।” তিনি এই মামলায় স্বেচ্ছায় রাজসাক্ষী হতে চান বলেও জানান। তার ভাষ্যমতে, এই গণহত্যার ব্যাপারে যত সত্য আছে, তা তিনি জানাতে প্রস্তুত।
পরে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের আইনজীবী জায়েদ বিদ আমজাদ জানান, তার মক্কেল রাজসাক্ষী হতে চেয়ে আদালতে একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনাল সেই আবেদন মঞ্জুর করে জানিয়েছেন যে, তাকে রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এটি মামলার তদন্ত ও বিচারে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিচার শুরু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে:
এর আগে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর তিন সদস্যের বেঞ্চ, বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে এই আদেশ দেওয়ায় জুলাই গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। সকালে জুলাই গণহত্যার মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন ও অভিযোগ:
গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা সংক্রান্ত ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। ওই প্রতিবেদনে শেখ হাসিনাকে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত এই সময়সীমা বর্ধিত করেছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে নিরস্ত্র ছাত্র ও জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার চলছে।9 অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্দোলন দমনে যে পদক্ষেপ নিয়েছিল, তাতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।