বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় এর প্রভাবে আজ (৯ জুলাই, ২০২৫) সকাল থেকে সারাদেশে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে এর তীব্রতা বেশি। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং আজ রাতের মধ্যে এটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তৎসংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলোতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। অন্যান্য উপকূলীয় জেলাগুলোতেও সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বৃষ্টিপাত ও জনজীবন:
সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঝড়ো হাওয়ার কারণে অনেক জায়গায় গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে নিচু এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কেন্দ্র এখনো উপকূল থেকে বেশ দূরে অবস্থান করছে, তবে এর অগ্রভাগ ইতোমধ্যে আঘাত হেনেছে। ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
প্রস্তুতি ও সতর্কতা:
সরকার ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। উপকূলীয় জেলাগুলোর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দফতর কন্ট্রোল রুম খুলেছে এবং জরুরি ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও দুর্যোগ কবলিত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে।
মৎস্যজীবীদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বন্দরে অবস্থানরত জাহাজগুলোকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল যখন উপকূল অতিক্রম করবে তখন এর গতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে উপকূলীয় নিচু এলাকায় বন্যা এবং পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার এবং নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।