যুক্তরাষ্ট্রে ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’র ঘোষণা

টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই দলটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমেরিকা পার্টি’। শনিবার (৫ জুলাই, ২০২৫) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই ঘোষণা দেন। মাস্কের এই ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

‘আপনার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে’

ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাস্ক তার পোস্টে বলেছেন, “আপনার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আজ আমেরিকা পার্টির জন্ম হলো।” নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মাস্ক এর আগে এক্স-এ একটি জরিপ চালিয়েছিলেন, যেখানে প্রায় ১২ লাখ ভোট পড়েছিল। তিনি জানান, ওই ভোটের দুই-তৃতীয়াংশই একটি নতুন দলের পক্ষে মত দিয়েছিল।

ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের বিরোধ

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি আলোচিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ বা করছাড় ও ব্যয় বৃদ্ধির বিলকে আইনে পরিণত করেছেন। ইলন মাস্ক এই বিলের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, “বিলটি যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেবে।”

উল্লেখ্য, ইলন মাস্ক এর আগে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে বড় অঙ্কের অর্থ অনুদান দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে তিনি তার সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান হিসেবেও কাজ করেছিলেন। তবে নতুন ব্যয় পরিকল্পনা নিয়ে মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের মধ্য দিয়ে এই বিরোধ আরও তীব্র হলো।

এর আগে মাস্ক জানিয়েছিলেন যে, তিনি একটি রাজনৈতিক দল গঠন করবেন এবং যেসব আইনপ্রণেতা ট্রাম্পের করছাড় ও ব্যয় বৃদ্ধি বিলের সমর্থনে ভোট দিয়েছেন, তাদের নির্বাচনে হারানোর জন্য অর্থ ব্যয় করবেন। এই সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন যে, মাস্কের কোম্পানিগুলো কেন্দ্রীয় সরকার থেকে যে ভর্তুকি পায়, তা বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।

‘আমেরিকা পার্টি’র সম্ভাব্য প্রভাব

ইলন মাস্কের নতুন দলের প্রভাব কেমন হবে, তা এখনই বলা কঠিন। তবে রিপাবলিকান দল আশঙ্কা করছে, এটি ২০২৬ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এদিকে, মাস্কের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে টেসলার শেয়ারের দামেও বড় পতন হয়েছে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর টেসলার প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪৮৮ ডলারে উঠেছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে তা অর্ধেকে নেমে আসে এবং সর্বশেষ গত সপ্তাহে শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৩১৫ ডলারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইলন মাস্ক যতই সম্পদশালী হোন না কেন, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের দীর্ঘদিনের দুই দলীয় আধিপত্য ভাঙা সহজ কাজ হবে না। এই দুটি দল গত ১৬০ বছরের বেশি সময় ধরে মার্কিন রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top