যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্ভাব্য হুমকির প্রেক্ষাপটে ইরানের পরমাণু সুবিধা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছে রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তান। প্রস্তাবটিতে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা বন্ধ ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবের মূল বিষয়বস্তু:
১. পরমাণু স্থাপনা রক্ষার জরুরি আহ্বান:
-
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) দ্বারা তত্ত্বাবধায়িত ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে কোনো হামলাকে “আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য হুমকি” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
-
প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এ ধরনের হামলা পরমাণু অপ্রসার চুক্তি (NPT) এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। যদিও সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে গত কয়েক মাসে ইরানের নাতজ ও ইসফাহান স্থাপনায় সন্দেহভাজন হামলার প্রেক্ষিতে এই বার্তা স্পষ্ট।
২. যুদ্ধবিরতি ও কূটনৈতিক সমাধানের তাগিদ:
-
সংঘাত প্রশমনের লক্ষ্যে সকল পক্ষকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়ে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
-
রাশিয়া ও চীন জোর দিয়ে বলেছে, “কোনো সামরিক সমাধানই টেকসই নয়, কূটনৈতিক পথই একমাত্র বিকল্প।”
ভোটের সম্ভাব্য পরিণতি:
-
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো প্রয়োগের আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষত যুদ্ধবিরতির বিষয়টি ইসরায়েলের সামরিক কৌশলের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
-
পশ্চিমা কূটনীতিকদের মতে, এই প্রস্তাব ইরানের প্রতি সমর্থন হিসেবে দেখা হতে পারে, যা পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে রাশিয়া-চীনের বিভেদ আরও বাড়াতে পারে।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
প্রস্তাবটি আগামী সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা হবে এবং ভোটের জন্য উপস্থাপন হতে পারে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, প্রস্তাব পাস হলে ইরান বিষয়ক পরমাণু চুক্তি (JCPOA) পুনরুজ্জীবনে চাপ বাড়বে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া নির্ধারণী হবে।
প্রাসঙ্গিক তথ্য:
-
গত এপ্রিলে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি।
-
IAEA-র সর্বশেষ রিপোর্টে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়ার তথ্য নজরদারি বাড়িয়েছে।