অর্থনীতি ডেস্ক;
চরম আর্থিক সংকটে থাকা বেসরকারি খাতের প্রথম প্রজন্মের অন্যতম ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক এবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে মামুন মাহমুদ শাহ-কে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায়। বর্তমানে এ নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।
কিন্তু নিয়োগপ্রত্যাশী মামুন মাহমুদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক ঋণখেলাপি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ। জানা গেছে, তিনি দেশের অন্তত ১৯টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেওয়া ৭ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি ঋণের একজন গ্রহীতা, যার মধ্যে ৫০ লাখ টাকার বেশি ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ। এ ছাড়া তার নামে ১৭টি ক্রেডিট কার্ডেও রয়েছে উল্লেখযোগ্য ঋণ।
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও এনআরবি ব্যাংকের এমডি ছিলেন, যেখানে দায়িত্বকালে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সূচকে ব্যাপক অবনতি হয়। এনআরবি ব্যাংকে কর্মকালীন তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা লঙ্ঘন করে শেয়ার কেনেন, ফলে ব্যাংকটিকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হয়।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তিনি হোম লোনের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন, যা তহবিল পাচার ও আইন লঙ্ঘনের শামিল। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এনআরবি ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগসাজশে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার বেশি অযোগ্য ঋণ বিতরণে জড়িত ছিলেন।
এমন বিতর্কিত ব্যক্তিকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগে ব্যাংকের কর্মকর্তা ও আমানতকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ন্যাশনাল ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, “ভালো নেতৃত্ব পেলে ন্যাশনাল ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে পারে, কিন্তু এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে নিয়োগ দিলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামুন মাহমুদ শাহ বলেন, “আমার ঋণের বিষয়টি ব্যাংক বুঝবে, কে কী অভিযোগ করল তা নিয়ে আমি চিন্তিত না।”
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু এ বিষয়ে ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক শারিয়ার সিদ্দিকী বলেন, “এমডি নিয়োগ হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী। সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় যাচাই করেই সিদ্ধান্ত দেবে।”